মার্কসবাদী এম এন রায় নাকি ভারতের রেনেসাঁর প্রবক্তা। এম এন রায়ের ‘ইসলামের ঐতিহাসিক ভূমিকা’[i]র বাংলা অনুবাদ করতে গিয়ে এই দাবী অনুবাদক বদিউর রহমানের । এম এন রায়ের মতন বিশাল মাপের বিপ্লবীর কাজ করতে গিয়া মনে হয় অনুবাদক দিশা হারাইলাইছে। আমাদের সুধীর বাবু বুদ্ধিজীবীর নোটবই-তে কইলেন এই সব লোকেরা বেদিশা অবস্থান[ii] নিয়া বইয়া আছেন। হাছাই মনে হয়।
রেনেসাঁ ধারণাটা আদতে কিচ্ছু না। অনেক আগেই, খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০ খ্রিস্টাব্দ থাকি স্টোয়িক স্কুল এই প্রাচীন দর্শনেবিকশিত হইছিল। স্টোয়িক জ্যোতিষবিজ্ঞান সাধারণত জোর দিছিল যে, মন শূন্য হইতে শুরু হয়, আর বাইরেরজগতের লগে পরিচয় হইতে হইতে জ্ঞান অর্জন করে। ডক্সোগ্রাফার ইতিয়াস এই দৃষ্টিভঙ্গিতাঁর সংক্ষিপ্তসার তুলেধরতেছেন যে ‘যখন কোনও মানুষ জন্মগ্রহণ করে, স্টোয়িকস বলে যে, তার আত্মার সর্বাধিক অংশটি কাগজেরশীটের মতো লেখার জন্য প্রস্তুত থাকে।’
একাদশ শতকে Tabula Rasa তত্ত্বটি দার্শনিক ইবনেসিনা আরও স্পষ্টভাবে বিকাশ করছিলাইন। তিনি যুক্তি দিছিলেন যে, "জন্মের সময় মানুষের বুদ্ধি জগত একটা লিখার খালি স্লেটের লাহান থাকে’—তাবুল রাসার বক্তব্যের সাথে মিল খায়। এইটা উনার আগেও গ্রীকরা কইয়া গেছেন। একটি খাঁটি সম্ভাবনা যা শিক্ষা-দীক্ষার মাধ্যমে বাস্তবে রূপান্তরিত হয় এবং তা বুঝবার পারে।" সুতরাং, ইবনে সিনার মতে জ্ঞান "এই বিশ্বের বস্তুগুলির সাথে অভিজ্ঞতাগত পরিচিতির মধ্য দিয়া পাওয়া যায়, যেখান থেকে একজন সর্বজনীন ধারণায় বিমুগ্ধ করে", যা "যুক্তিবিদ্যার সিলেলোজিস্টিক পদ্ধতি" এর মাধ্যমে বিকশিত হয়; পর্যবেক্ষণগুলি প্রস্তাবিত বক্তব্যগুলিতে নেতৃত্ব দেয়, যখন আরও বিমূর্ত ধারণাগুলিকে সংমিশ্রিত করে।“ তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে বুদ্ধি নিজেই "স্থিতিশীল/বস্তুগত বুদ্ধি (আল-আক্কল আল-হাইযলানী) থেকে বিকাশের স্তর অর্জন করে, সেই সম্ভাবনা সক্রিয় বুদ্ধি (আল-হক্কল আল-ফাযিল) এর কাছে জ্ঞান অর্জন করতে পারে" জ্ঞানের নিখুঁত উৎসের সাথে একত্রে মানব বুদ্ধির অবস্থা।
ঐতিহাসিকভাবে, ইম্পিরিসিজম বা অভিজ্ঞতাবাদ এই "ফাঁকা স্লেট" ধারণার (তাবুল রাসা) সাথে জড়িত আছিল, যার অনুসারে জন্মগতভাবেই মানুষের মন "ফাঁকা" থাকে এবং কেবল অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই তার চিন্তাভাবনাগুলি বিকশিত হয়। মূলতঃ এই ধারণাটাই দেকার্তের রেশনালিজম ফিলোসফি হইতে ডেভিড হিউমের এম্পিরিক্যাল ফিলোসফির জন্ম। টেবিল-২ দ্যাহেন।
বিজ্ঞানের দর্শনে অভিজ্ঞতা দরকারি। অভিজ্ঞতা প্রমাণরে জোর দিবার পারে। কিন্তু আবার বায়াসও করে। বিশেষ করে পরীক্ষাগুলাতে যে ‘ট্রুথ’ বা জ্ঞান পয়দা করা হয়। একটা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিবিদ্যার মৌলিক এলিমেন্ট হইলো অনুমান বা ইনফারেন্স, এবং থিওরি। ন্যাচারাল ওয়ার্ল্ড মানে সমাজ ও সংসকৃতি পর্যবেক্ষণের সময় আগেকার যুক্তি ,থিয়োরি, বা লজিক এর উপর একমাত্র নির্ভরশীল না হইয়া বরং হিউমিনিটিকে প্রাধান্য দিয়া বিজ্ঞান এর প্র্যাকটিস করা উচিৎ। কিন্তু, পরীক্ষা করতে গিয়া যদি মাইনষেরে শোষণ করি, কিংবা শোষণ করার রিকমেন্ডেশন বানাইয়া দেই। তাইলে এই পরীক্ষার মাইনে কী? তাই যদি হয়, তাইলে, হেগেল, মিল আর লকরা কী করে কই দেন, ভারত হল অসভ্য আর বর্বর। রেনেসাঁর যুগ। আহারে! রেনেসাঁ! ভাই, দূর ইতালি আর ইয়ূরোপ যাওনের কাম নাই। কষ্ট কইরা কান্তজির মন্দিরের গতর খান দেহেন। দিনাজপুর হতে আওনের সময় বগুড়ার পূন্ড্রনগরও। দ্যাখতে পারেন কুমিল্লার ময়নামতিও। ভাবতে পারেন ইউরোপের রেনেসাঁর আগে আমরা কেমন ছিলাম? কুমিল্লার ময়নামতি যান। নিচের টেবিলটা দ্যাহেন, আমাদের ভারতীয় আর্যভট্ট যিনি শূন্য আবিষ্কার করছিলেন সেটা আর গাণিতিক সূত্র্রের কথা আমদের ‘বোধ-এও আসেনা, ‘চিত্তে’ও জায়গা দেইনা। পানিনি বাবু যখন ব্যাকরণ আর অঙ্কের সূত্র তৈয়ার করেন, ইনারা কই আছিলেন! ঠিক-ই আছে, ইনারা অন্ধকারে ঘুমাই ছিলেন। ঘুম থাকি উঠে ছবি আঁকা শুরু করলেন। শুরু হইল রেনেসাঁ। জাগরণ।
নিচে পরপর দুইখানা ছবি আছে। এই দুখানা দেখনের পরে, আমাদের কি সংবিৎ ফিরে আইবো আর বোধ ও চিত্তের উদয় হইবো? আমরা কি আশাবাদী হইবার পারি?
ছবি.১.৪: পুবের মানুষের রেনেসাঁ! আর দর্শন, সুত্রঃ Indian Way, পেইজ vi
হিউমকে নিয়া আমরা আলাদা লিখতে পারতাম কিন্তু হিউমের প্রভাব আইজকার যুগের ইউটিলিটারিয়ান দর্শনে এতোটাই ইনফ্লুয়েন্সিয়াল এমনকি বর্তমান যুগের আইকনিক ফিলোসফারদের (ড্রেরেক পারফিট , জন রাউলস এবং হিউমের বন্ধু এ্যাডাম স্মিথ ) কাজগুলো এখনো আমাদের দর্শন জগতে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। যেমন এ্যাডাম স্মিথের অর্থনীতির দর্শন। হিউমের ধারণায় ব্যক্তি আসলে কিছুনা। কেবল তার সারাটা জিন্দেগির অভিজ্ঞতার এক কালেকশন। ডেভিড হিউম নোয়িং বা জানাটার চাইতে ফিলিংসের বেশী গুরুত্ব দিয়েছিলেন। নৈতিকতাগুলা আবেগকে উত্তেজিত করে, এবং কাজকাম প্রোডিউস কিংবা প্রটেক্ট করে। হিউমের মতে রিজনিং বা রেশনালিটি সম্পূর্ণরূপে দুর্বল। নৈতিকতার বিধিগুলা আমাদের যুক্তির বা চিন্তার আউটকাম হইবার পারেনা। আর্থার শোপেনহাওয়ার এক জায়গায় কইছিলেন, হেগেল, হাবার্ট আর শেইলমার্কার(Schleiermacher) , এদের হকল দর্শনের বই পড়ার চাইতে ডেভিড হিউমের একপাতা দর্শন পড়া ঢের ভালো।[i]
যুক্তিডা হিউম ভালাই দিছিলেন। মাঠকর্ম না কইরা যদি আপনি বই পুস্তকের ডেটা দিবার চাহেন, সমস্যা নাই, তাইলে মনে হইবো, যে আপনি নিজের মনের কাছে একটা দাসখত দিয়া দিলেন। একটু আগেই কইছিলাম, এটা একটা পুরানা বিতর্ক। রেশনালিস্টদের রিজেক্ট করিয়া যুক্তিবাদী হিউমরা বিশ্বাস করতেন যে, বাস্তবের অন্তর্নিহিত যৌক্তিক কাঠামো আছে। বাস্তবজগতটা স্ট্র্যাকচার্ড। এর লাগি, যুক্তিবাদীরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে, নির্দিষ্ট কিছু সত্য এক্সজিস্টিং এবং বুদ্ধি সরাসরি এই সত্যগুলি উপলব্ধি করতে পারে। এর অর্থ, যুক্তিবাদীরা জোর দিছিলেন যে, যুক্তি, গণিত, নীতিশাস্ত্র এবং মেটাফিজিক্স-এ নীতিগুলা বিদ্যমান আছে, কিন্তু, মৌলিকভাবে এখানে, বিজ্ঞানের দর্শনটাকে অস্বীকার করা হইতেছে। এ জন্যই আইনস্টাইন ১৯১৫ সালে লিখছিলেন হিউমের পজিটিভিজম উনার থিয়োরি অফ রিলেটিভিটি ফর্মুলেট করতে উৎসাহ দিতেন। ব্রনিসলো ম্যালিনোস্কির ছাত্র র্যামন ফার্থ আর তার ছাত্র এ্যাডমন্ড লীচ এই ধারার নমস্য নৃবিজ্ঞানীগণ। টীকাতে একখান থিসিস দিলাম , পড়বার পারেন।[ii] ইম্পিরিক্যাল দর্শনের আরেক নাম আমরা কী ভুলে যাব? ফ্রান্সিস বেকন। হিউম বা বেকনের ইম্পিরিক্যাল পজিশন, আর হেগেল বা দেকারতের যুক্তি, সব কিন্তু আদতে ইনারা কলোনির লাগি কাজ কইরা গেছেন। বেকনের একটা বিখ্যাত কথা হুনেন। বেকন তার জীবনের তিনটা টাগের্টের কথা কইছিলেন। পয়লা কাম হইলো নাকি সত্যবাবুরে উন্মোচন করা, দুই, তার দেশের মাইনে গ্রেট বৃটেনের সেবা করা এবং শেষে কইলেন গির্জার খেদমত ভদ্র ভাষায় সিভিলাইজিং মিশন।[iii] কইয়া রাখি, বেকন কিন্তু হিউমের আগের, ১৫৮০, লিখা শুরু করেন, ১৫৯২ সাংসদ হন, রানী পয়লা এলিজাবেথের এডভাইসর আছিলেন। এটার ধারা আমাদের এই এলাকাতেও আছে।
আমাদের এই অঞ্চলে ডেভিড হিউমের ভাবশিষ্য এম এন শ্রীনিবাস তিনি র্যাডক্লিফ ব্র্যাউন আর ইভান্স প্রিচার্ড -এই দু’জনের সুপারভিশনে পিএইচডি শেষ করেন (১৯৪৬ সালের জুলাই মাসে র্যাডক্লিফ ব্র্যাউন রিটায়ার্ড করলে ইভান্স-প্রিচার্ড তাঁর দ্বিতীয় সুপারভাইজার হিছিলেন। শ্রীনিবাস কইছিলেন, I was his first doctoral student and R-B’s last. I regard this as a distinction. সিলসিলাটা জানার দরকার আছে। ভিসিটিং প্রফেসর হইয়া র্যাডক্লিফ ব্র্যাউন আবার অক্সফোর্ডে ফিরে আসেন। এবং শ্রীনিবাসরে লেকচারার হইতে অনুরোধ করেন। এভাবেই একজন ইন্ডিয়ান ইম্পিরিক্যাল নৃবিজ্ঞানীর জন্ম হলো, যিনি সাদা মাস্ক পড়ে স্বদেশীদের নিয়ে গবেষণা শুরু করে দিলেন। তারপরে, ১৯৫১ সালে বারোদা বিশ্ববিদ্যালয়ে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৫৯ সালে যোগদান করেন। বাংলাদেশের আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী হলেন শ্রীনিবাসের অধীনে পিএইচডি সম্পন্ন করেন আর, ড. আব্দুল আউয়াল বিশ্বাস হলেন সেই আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরীর অধীনে পিএইচডি সম্পন্ন করা ব্যক্তি কিংবা নৃবিজ্ঞানী । আর হুনবেন? পরে কইমুনে, এখন থাহুক।[iv] নিকোলাস ড্রিকের মতে,
এথনোগ্রাফিক জ্ঞান ভারতকে কলোনিয়াল স্টেট বানায় এবং ভারত শাসনে প্রযুক্তি হিসাবে এথনোগ্রাফিক সাংস্কৃতিক জ্ঞানকে কাজে লাগান । এর ফলে ভারত এথনোগ্রাফিক স্টেট হতে রেভেনিউ স্টেট এ পরিগণিত হইলো সহসাই।[v]
দার্শনিক যুক্তিবাদীদের বিরোধী, হিউম বলেছিলেন যে, যুক্তিগুলির পরিবর্তে আবেগগুলি মানুষের আচরণকে পরিচালনা করে,বিখ্যাতভাবে ঘোষণা করে দিলেন যে “যুক্তিগুলো কেবল আবেগের দাস হওয়া উচিৎ।” তাঁর বিখ্যাত মানব প্রকৃতির এমন একটি গ্রন্থ যা জন্মগত ধারণার অস্তিত্বের বিরুদ্ধে ছিল, এই বলে যে সমস্ত মানবিক জ্ঞান কেবল অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত। এটি তাকে ফ্রান্সিস বেকন, থমাস হবস, জন লক এবং জর্জ বার্কলেকে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদী হিসাবে রাখে। এটা কি আফনেরার কাছে পরিষ্কার হইছে?
রাজনৈতিক ফিলোসফিতে ডেভিড হিউম খুব প্রভাবশালী আছিলেন। আগে কইছিলাম, শেষমেষ আরেকটা উদাহরণ দেই, হিউমের অন্তর্দৃষ্টির ফলে পপারের বড় কাজ The Logic of Scientific Discovery, আর এখান থেকেই পোস্ট-পজিটিভিজমের জন্ম।
তাই, ইতিহাসটা পড়ন দরকার। ইতিহাসের লাগি ইতিহাস এক জিনিশ, আর দর্শন বিজ্ঞানের লাগি অন্য জিনিশ। বাছাই করা কয়েকটা আর্টিকেল লইয়া এখখান বই আছে, সহজ করি লিখা, হক্কলের বুঝতে অসুবিধা হইবার কথা নাঃ Why Does History Matter to Philosophy and the Sciences?[vi]
যাইহোক, পচ্ছিমের নৈতিক শিক্ষা আমরারে বর্বর আর অসভ্য বানায়।[vii] পশ্চিমের রেশনালিস্ট হোক আর ইম্প্রিরিক্যাল হোক—দুনু মতবাদই আমারারে আলাদা কইরা রাখছে। দার্শনিকভাবে আর নৃবিজ্ঞানের কাজে, পুবকে উপস্থাপন করছে নিম্নতরভাবে। ফলাফল যাইহোক—ইনাদের কাজে আমাদের পুবের কোন লাভ হয় নাই।[viii] বিপরীতে, পুবের ইবনেসিনা, আল-ফারাবি, আল-কিন্দি, চৈতন্য দর্শনের আমরা নিজেরে রিলেটেড রাখবার পারি। জ্ঞানের পরীক্ষামূলকভাবে আমরা আরেকটা কাজ করব ভাবতেছিঃ লক আর হিউমের চউখে মার্কসের দর্শন। কারণ, মার্কস আমাদের দেশেই না, বরং তাবৎ দুনিয়ায় আমরার ধারণা, এককভাবে একাডেমিক আর নন-একেডেমিক দুই জায়গাতেই এই লোকরে সমান তালে সবাই পড়েন।
যাই হোক, আমরা এই লম্বা ভুমিকায় অনেক কথা কইইয়া লইছি।
কিছুটা হইলেও, আমাদের নিজেদের এবং আমাদের আলোচক (পাঠক নয়) এবং বিদ্যাপতিদের লাগি—আমরা যারা গ্রীক থেকে পশ্চিমে ক্রমাগত ঝাঁপাইয়া পড়তেছি—তারা বইটাতে একটু আশ্রয় পাতে পারি। দুঃখের বিষয় না, তবে আমরা আমাদের ‘একাডেমিক এনসেস্টর’দের বাস্তবতা বুঝবার পারি। (আমরা আরব আর ইন্ডিয়ান ফিলোসফি পড়তাম না, ইংরাজি ফিলোসোফি পড়বাম।। দেবী প্রসাদের লোকায়ত দর্শন ইজ আ কমপ্লিট স্ট্যান্ড। এ রকম একটা বই আমাদের আছে, তার পরেও লিখতে বসলাম, ঐ একই কারণঃ গ্রীক থাকি, পুবের আগমন। মধ্য যুগটার উপস্থিতি নাই। আমাদের চউখ খোলে দেয়। সুধীর চক্রবর্তীর লোকসমাজ ও লোকচিত্র, আর হরপ্রসাদ না পড়লে আমরা লিখতে পারতাম কি সন্দেহ জাগে। নীহাররন্জন রায়ের ’বাঙালীর ইতিহাস’, হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ’হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’, রাখালদাস বন্দোপাধ্যায়ের ’বাঙ্গালার ইতিহাস (দুই খণ্ড)’ অতুল সুরের ’বাঙালীর নৃতাত্ত্বিক পরিচয়’, ইরফান হাবিবের ’ভারতবর্ষের ইতিহাস প্রসঙ্গ: মার্কসীয় চেতনার আলোকে’ , রেবতী বর্মনের ’সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ’, পন্ডিত জওহরলার নেহরেুর ’বিশ্ব ইতিহাস প্রসঙ্গে’ এবং ’ভারত সন্ধানে’, বিনয় ঘোষের ’বাংলার বিদ্বৎ সমাজ’, এবং ‘বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা’, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ’ইতিহাসের উত্তরাধিকার’ , ফরহাদ মজহারের ‘মার্কস পাঠের ভূমিকা’,মুজাফ্ফর আহ্মদ, রেবতী বর্মণ, আবদুল হালিম, আবদুল্লা রসুল এদের ’কৃষক-আন্দোলন’, রাহুল সাংকৃত্যায়নের ’চেতনার দাসত্ব’ এবং ভোলগা থেকে গঙ্গা’ ,তপন রায় চৌধুরীর বাঙাল নামা, আহমেদ শরীফের ’বাউলতত্ত্ব’, কেদার নাথ ব্যানার্জীর ’ভারত বর্ষের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ , নীরদ সি চৌধুরীর ’আত্মঘাতী বাঙ্গালী’ , এবং ’বাঙ্গালীর জীবনে রমনী’, সরদার ফজলুল করিমের ’আমি সরদার বলছি’, হায়দার আকবর খান রনোর ,’মার্কসবাদের প্রথম পাঠ’, বদরুদ্দীন উমরের ’ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাংলাদেশের কৃষক’ দেওয়ান আজরফের ভা’ববাদ যুগে যুগে’ পড়বার পারেন। একটু মজা পাইতে পড়েন। অথচ গ্রীক ট্র্যাডিশনটারে পশ্চিমে পরিচয় করি দিবার মাধ্যমটা আরবের এই ধারা। ঐতিহ্যের কথা আমাদের নৃবিজ্ঞানীরা কন, বাস্তব অস্তিত্ব স্বীকার করার সময় একটু ভুলে যান। দর্শনের জায়গা থাকি দেখলে কুরআন, বেদ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
জাহিদ সিরাজ
[i] Schopenhauer, A. (2012). The world as will and representation (Vol. 1). Courier Corporation. পেইজ ৫৮২।
[ii] Hume’s Conservative Utilitarianism: An Interpretation of David Hume’s Political and Moral PhilosophyChien-Kang (Brian) ChenA thesis submitted to the Department of Governmentof the London School of Economics and Political Science for the degree of Doctor of Philosophy, London, October 2012, লগে এই বইতার ভুমিকাটা দেখেন, An Anthropology of the Enlightenment
Moral Social Relations Then and Today Nigel Rapport and Huon Wardle (eds)
[iii] Ellis, R. P. (2015). Francis Bacon: The Double-edged Life of the Philosopher and Statesman. McFarland পেইজ ২৮,মূল বইটা দেখন দরকার, Hume, D. (2003). A treatise of human nature. Courier Corporation.
[iv]Srinivas, M. N. (1997). Practicing social anthropology in India. Annual Review of Anthropology, 26(1), 1-24, পেইজ ১১। এ আরটিক্যাল্টা আমরাভাবের অনুবাদ করতামঃ বন্দি মননের বিধিজিবি পর্ব -২ তে। রিলেটেড আরো দুইখান লিখা দেখবার পারেন, আমদের এই এলাকায় ন্ররবিজ্ঞানের থকিজু পাইবে, Mathur, S. (2000). History and anthropology in South Asia: Rethinking the archive. Annual Review of Anthropology, 29(1), 89-106; Roque, R., & Traube, E. G. (2019). Introduction: Crossing Histories and Ethnographies. Crossing Histories and Ethnographies: Following Colonial Historicities in Timor-Leste, 1-46.
[v] Dirks developed his approach along Foucauldian lines, arguing that the colonial state in India made ethnographic knowledge into one of its primary cultural technologies of rule; in British India, a “revenue state” gave way to a type of “ethnographic state, Roque, R., & Traube, E. G. (2019). Introduction: Crossing Histories and Ethnographies. Crossing Histories and Ethnographies: Following Colonial Historicities in Timor-Leste, 1-46, পেইজ ১১, এইটা আরেকটা ভালা লিখা, নাড়াচাড়া কইরা দ্যাহেন।
[vi] Krüger, L., Sturm, T., Carl, W., & Daston, L. (2005). Why Does History Matter to Philosophy and the Sciences?.
[vii] Stuart-Buttle, T. (2020). Hume, Cicero, and Eighteenth-Century Moral Philosophy. In Antiquity and Enlightenment Culture (pp. 195-218). Brill, পেইজ, ১৯৮-২০০
[viii] Buckle, S. (1999). British sceptical realism: a fresh look at the british tradition. European Journal of Philosophy, 7(1), 1-29.
[i] এই বইটা আসলেই একটা ঐতিহাসিক দলিল। ইসলামের ঐতিহাসিক ভূমিকা’এম এন রায়ের একটি অসাধারণ মূল্যায়নধর্মী রচনা। বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের শিক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে বইটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এম এন রায় বইটি লেখেন জেলে বসে। তিনি এমন সময়ে বইটি লেখেন, যখন এইউপমহাদেশের হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায় একে অপরের থেকে দ্রুত দূরে সরে যাচ্ছিলেন। ১৯২৫ সালে উভয় সম্প্রদায়ের আস্থাভাজন নেতা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসমারা যান। এই সময়ে শিক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে সমষ্টিগতভাবে জাতিসত্তার আকাঙ্ক্ষা জোরদার হয়ে উঠেছিল এবং হিন্দু নেতাদের মধ্যে দেশবন্ধুর মতো সবারআস্থাভাজন নেতা বিরল ছিলেন। আনন্দবাজার থেকে একটা লিখা আছে এম এন রায় নিয়া। দেখবার পারেন।https://www.anandabazar.com/editorial/feature-on-manabendranath-roy-1.1113044
[ii] বুদ্ধিজীবীর নোটবই কিন্তু সুধীর বাবুর একলা লিখা না, সংকলন। খুব চমৎকার করে একটা ভূমিকা লিখছিলেন। বইটাতে যারাই লিখেছেন তিনারা গভীরেযাননাই, মনে হয়, নোটবই নামটা একটা কারণ। কিন্তু, আলাপ আলোচনার জায়গাটা পরিষ্কার করে দিছেন।