এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২

পিতার পত্র - ১ থেকে ৫


 

প্রিয় পুত্র,

শত সহস্র নন্দন বিকশিত  পারিজাত তোমার মস্তকে বর্ষিত হোক। আশা করি ঈশ্বর তোমাকে ভাল রেখেছে। দীর্ঘ ব্যবধানে পত্র পাঠাচ্ছি। বহু চেষ্টা ও সাধনা করে তোমার নিকট পত্র ও টাকা পাঠাচ্ছি। 

টাকা পাঠাতে বড্ড দেরী হল। হয়তো রাগ করেছ কিংবা ভুল বুঝে আছ। কিন্তু প্রকৃতির নিয়মেই এটা ঘটে গেল। তুমি কখনো সাহস হারাবে না। হতাশার  কোন কারণ নাই। শুরু যখন করেছ তাহলে যেভাবেই হোক তা শেষ করতে হবে। তুমি পূর্ণ উদ্যমে পরীক্ষা দাও। ফল ঈশ্বরে সমর্পণ কর। এবার ----- টাকা দিলাম এবং এ মাসের শেষে আরো কমপক্ষে ---- টাকা দিব।  তুমি পত্র পেয়ে উত্তর দিবে। পরীক্ষা শেষে বাড়ী না এলে তা জানাবে। 

গোটা আষাঢ় মাস বৃষ্টি খুব কম। চাষাবাদ খুব কষ্টে হচ্ছে।কি যে হবে বলা যায় না। 

 সাবধানে থাকিও। তুমিই শুধু আমার নও সকলের ভরসা। এ আশা যেন ভগবান পূর্ণ করেন। তোমার সুখী ও সুন্দর  কামনা করছি।


     ইতি 

তোমারই পিতা 

 

পিতার পত্র—৪ 


প্রিয়পুত্র,

পত্রে শত সহস্র আর্শিবাদ রইল। তোমার প্রেরিত পত্র  পেয়েছি। পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারলাম না। হতাশা বা ক্ষোভ নয়, সামনে আরো অনেক কিছু আছে। তুমি শুধু এগিয়ে যাও। ভয় করো না বা হতাশ হয়ো না। অদৃষ্টে যা আছে তাতো মেনে নিতে হবে। 

যাই হোক , তোমার অপেক্ষায় ছিলাম, হয়তো বাড়ী আসবে। যখন এলেনা। তাই ---- টাকা দিলাম। আর সামনে মাসে ২০ তারিখের পূর্বেই টাকা পেয়ে যাবে। ভালভাবে লেখাপড়া করো। নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ভাবে অংশগ্রহণ না করাই উচিত। আগে ”সাধন সিদ্ধি পরে সম্পদ বৃদ্ধি”। 

আমরা বাড়ীতে ভাল আছি। তুমি ভাল থাক , সুখে থাক, পত্র পেয়ে পত্র দিবে। 

  ইতি 
তোমারই পিতা




পিতার পত্র—৩


প্রিয় পুত্র,

পত্রে শুভেচ্ছা রইল। আশা করি ভাল আছ। আর তোমার পত্র পেয়েছি। এবার পত্রে একটু উত্তাপ ছিল যা আগেকার পত্রে ছিল না। হয়তো জানো দুঃখকে বরণ করা এবং সত্যের আদর্শে অটল থাকাই হল সনাতন ধর্মের বৈশিষ্ঠ্য। 

তোমার পরীক্ষা নিশ্চয় ভাল হচ্ছে। আর্শিবাদ করি ঈশ্বরের কৃপায় পরীক্ষা ভাল হোক। রাগ বা ক্রোধ করে তো থাকা চলবেনা। বরং বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই তো আসল কাজ। 

আজকেই বেতন তুলে এবার ---- টাকা পাঠানো হল। তুমি তুলে নিও। এগিয়ে যাও, সমস্ত বাধা অবসানের পথে। এ মুহুর্তে ভিন্ন চিন্তা  বা (---)  হওয়া মোটেই সমীচীন হবে না। জুনের বেতন এ মাসের শেষে হতে পারে। কাজেই হতাশা বা দুর্ভাবনার কোন কারণ নাই। 

বৃষ্টি ভাল হচ্ছে, বন্যা হয় নাই। জমিতে চারা লাগানো কিছু বাকী আছে। বাড়ীতে সকলেই ভাল আছি। 

তোমার শুভ কামনায় এখানেই শেষ করছি। 

                                                        ইতি 

                                                তোমারই পিতা 


বিঃদ্রঃ বাড়ীতে যখন আসবে তখন চা গাছের চারা নিয়ে আসবে। যা তোমার স্মৃতি আগামীতে বহন করবে। 

  

 

পিতার পত্র—২

 প্রিয় পুত্র, 

পত্রে শত শুভেচ্ছা ও আর্শিবাদ  রইল। আশা করি ভাল আছ। তোমার প্রেরিত পত্র পেয়েছি। পড়ে সবকিছু অবগত হলাম। তুমি ফলাফল সম্পর্কে হতাশ কখনো হবে না। তুমি তোমার দ্বায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে যাও। আর ঈশ্বর অবশ্যই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাবেই। 

ক্যাম্পাসে লেখাপড়া ঐভাবেই চলে। তুমি নিজেকে ম্যানেজ করে দ্বায়িত্ব , কর্তব্যে অবিচল থাকবে। সামনের পরীক্ষা ভালভাবে দাও, তবে অতি উচ্চাশা অনেক সময় ক্ষতির দিকে টেনে আনে। 

যাই হোক, বেতন না পাওয়ার জন্য তোমার কাছে টাকা কিংবা পত্র পাঠাইনি। জুনের বেতন কেবল ২৭ তারিখে পেলাম। বিয়ের ব্যাপারে বাহিরের ধার দেনাগুলো পরিশোধ করতে হচ্ছে , যার জন্য  নিজেকে অনেক সময় ভেঙ্গে পড়ছিলাম। যাই হোক বেতন আবার আগামী ৫ই সেপ্টেম্বর পাব। আগামী ৭/৮ তারিখে আবার টাকা পাঠাব। তুমি এই কয়েকটা দিন কোন রকমে চালিয়ে নাও। 

এদিকে লোনের কাজ এখনো সমাধান হয়নি।  ---- এ জন্য কয়েক দিনের জন্য মাত্র --- টাকা দিলাম। যা কখনো দেওয়া হয় নাই এবং ভবিষ্যতে হয়তো হবে না। 

তোমার কাকাসহ সকলেই ৩রা আগস্ট রায়গঞ্জ থেকে নিঃশর্তে বাড়ী এসেছে। 

নূপুর ও জামাই বাড়ী এসেছিল। তারা বর্তমানে ভাল আছে।  

তোমার কুশল কামনা করে এখানেই শেষ করছি। 

                                                                             ইতি 

                                                                    তোমারই পিতা 

পুনশ্চঃ দুঃখটাকে পুষি জীবনের স্বপ্ন দিয়েইচ্ছের ব্যর্থতা দিয়েবোধের গ্লানিটুকু দিয়েউপদেশ আর আশ্বাস দিয়েঅনাগত দিনের রঙ দিয়ে...
দুঃখ জীবনের প্রধান শিক্ষকতার কাছে প্রাপ্তির সমান ঋণঅপ্রাপ্তির চেয়ে বেশি আবেদনঅনুভূতির ফলাফল আর আরেকটু আশ্বাস। সবথেকে দীর্ঘ  প্রতিবেশী আর উপস্থিতির নাম দুঃখ ..........

                                                                                    ইতি                                                                       

                                                                                     তোমারই পিতা  


পিতার পত্র—১ 


স্নেহের পুত্র,

পত্রে আর্শিবাদ রইল। আশা করি ভাল আছ। তুমি হয়তো টাকাগুলো পেয়েছো। বেতন তুলতে দেরী হল এবং অফিস বন্ধ থাকার কারনে তোমার কাছে টাকা পাঠানো হলো না। সফিউলের সাথে আলাপ হয়েছে । সে আগামী ৪/৪/১৯৯৯ ই তারিখে ঢাকা যাবে। তাই তার হাতে হাতে ---- টাকা পাঠাবো। ---- 

আমাদের এলাকায় দারুণ খরা, এখনো কোন বৃষ্টি নাই। ইরি  আবাদ প্রায় বন্ধ। আমরা বাড়ীতে সকলেই ভাল আছি। তুমি হয়তো দারুণ কষ্টের মধ্যেই আছ। কিন্তু কি করবে? সবকিছুই মেনে চলতে হয়। বাড়ী আসো । পরবর্তীতে যেন এ অবস্থা না হয় সে চেষ্টা করা যাবে। শুধু প্রার্থনা করি ঈশ্বর যেন তোমার মনোবাঞ্চা পূর্ণ করে। 

তোমার অসাধারণ সাফল্যে আমরা খুশী।তোমার এ সফলতা যেন চিরদিন বজায় থাকে। মনেরেখো ভক্ত বাঞ্চা পূর্ণ করে নন্দের নন্দন।” শুধু ধর্ম মেনে চলবে নীতিতে অটল থাকবে। তবেই উন্নতি। ”

 

তোমার কুশল কামনায় শেষ করছি। 

                                                                                                     ইতি

                                                                                তোমারই পিতা।  

কোন মন্তব্য নেই: