পিতার পত্র—২০
প্রিয় পুত্র,
আমার সহস্র আর্শিবাদ রইল । এমন পরিবার থেকে তুমি যে ভার্সিটিতে ভর্তি হতে পেরেছো সেটাই তো সুখের কথা। তোমাকে যে ভার্সিটিতে ভর্তি করাতে পারলাম এটাই তো গৌরব। ------------- মধ্যে থেকে এমন আর্থিক দৈন্যের মধ্যে টিকে আছ, এটাই তো আশ্চর্য। তোমার সবোর্চ্চ সাফল্য কামনা করছি।
মনে রেখো অর্জুন যখন যুদ্ধের প্রাক্কালে দ্বিধাগ্রস্ত, শোক বিহ্বল, হতবাক কি করবে স্থরি করতে পারছে না, তখনই শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন –” মামনুস্মর যুধ্য এব চ” অর্থ্যাৎ আমাকে স্মরণ কর এবং যুদ্ধ কর, আমিই সব করব।
তাই বলি তুমিও ভগবানকে স্মরণ কর এবং কর্ম করে যাও, ফল তোমার হাতে নাই ।
আগামী মাসের ২/৩ তারিখে গনেশ শরেন ঢাকায় যাবে এবং তোমার সঙ্গে দেখা করবে। তার সাথে আলাপ করিও । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ ভালভাবে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নাও, সফলতা আসবেই।
যদি আমাকে যেতে হয় যাবো। তুমি পরে জানাবে। আর না হয় পরীক্ষা দিয়ে বাড়ী এসো। তখন সবকিছু আলাপ হবে। গত কয়েকদিন বৃষ্টি বাদলের পর আকাশ এখন মুক্ত। ধান কাটা হয়েছে। সিলেটে সেনানিবাসে মোশাররফ হোসেন আছেন তার সাথে যোগাযোগ করিও।
আমরা বাড়ীতে সকলেই ভাল আছি। তোমার সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করি। ” উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই।” প্রতিদিন গীতা পাঠ করিও । বিদেশে তুমিই ছাত্র এবং তুমিই অভিভাবক। তোমাকেই সবকিছু ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
পিতার পত্র—১৯
প্রিয় পুত্র ,
পত্রে শুভছ্ছো আর্শিবাদ রইল। পর সংবাদ কন্টিনন্টোল কুরিয়ার সার্ভিসে -------------- টাকা পাঠালাম । তুলে নিও। মনে রেখো 'ভক্তের অধীন ভগবান।' তাই, জাবি এর ফল প্রকাশ পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকো। আরো টাকা পাঠাইতাম । কিন্তু সামনে মনসা পূজা তাই কম করে দিলাম। সামনে মাসে ------------ টাকা পাঠাবো।
তোমার সঙ্গে আরো আলাপ হবে।
তোমার কুশল কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
ইতি
পিতার পত্র—১৮
কল্যাণীয়,
পত্রে আর্শিবাদ রইল। আশা করি ভাল আছ। তোমার পত্র পেয়েছি। কিন্তু বদিউজ্জামানের কাছ থেকে টাকা ও জিনিষগুলো পেলে কি না ? তা খবর পেলাম না। তুমি পত্র পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিবে। এবারে ----টাকা দিলাম ।
মনোযোগের সাথে লেখাপড়া কর। ভয় পেয়োনা। সাহসী হও। স্থির লক্ষ্যে ক্রমাগত এগিয়ে যাও। এবার এলাকায় অনাবৃষ্টি । ধান হয়তো সুবিধা হবে না।
আমরা বর্তমানে সকলেই ভাল আছি। তোমার বইয়ের জন্য লোক গেলে নিয়ে আসবে। এলেই পাঠাব। তোমার কুশল কামনা করে শেষ করছি।
ইতি
পিতার পত্র—১৭
প্রিয় বৎস,
পত্রে আর্শিবাদ রইল। আশা করি ভাল আছ। পর সংবাদ পর পর দুইটি পত্র ও টাকা পাঠানোর কোন সংবাদ না পাওয়ায় বেশ চিন্তিত। কেমন আছ? কিভাবে পড়াশুনা হচ্ছে এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত।
টাকার জন্য কি রাগ করে পত্র দিচ্ছ না নাকি অন্যকোন কারনে। যাই হোক পত্র পাওয়া মাত্র উত্তর দিয়ে মনের চিন্তা দূর করবে। আমি ভাল আছি। আগামী ১৫/১১ তারিখের মধ্যে টাকা পাঠাতে পারি। তোমার শুভ কামনায় এখানেই শেষ করছি ।
ইতি
পিতার পত্র—১৬
প্রিয় পুত্র,
শারদীয় শুভেচ্ছা দিয়ে শুরু করছি। আশা করি মায়ের কৃপায় ভাল আছ এবং ভাল থাক। নির্বাচন পরবর্তী অবস্থা মনকে বড় আঘাত দিয়েছে। যদিও আমাদের এলাকায় তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি। পূজা হয়তো তেমন ভাল হবে না। কোন রকমে দায়সারা গোছের।
যাই হোক তোমার পত্র পেয়েছি এবং সবকিছু অবগত হলাম। তুমি মনোযোগ সহ ভালভাবে লখোপড়া কর। সামনে পরীক্ষা তোমার লক্ষ্য সেটাই।
এবারে কেবল ------ টাকা দিলাম। বেতনের কোন খবর নাই। বেতন এলে আবারো পাঠাব। আমরা বাড়ীতে সকলেই মোটামুটি ভাল আছি। তোমার কুশল কামনায় এখানেই শেষ করছি।
ইতি
1 টি মন্তব্য:
সব পিতাই সন্তানের মঙ্গলের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে, স্বপ্ন দেখে। আর যদি সেই স্বপ্ন সফলতায় রূপ নেয় তাহলে পিতার মত আর কেউ
খুশি হয় না। পিতার চিঠি পড়ে অভিভূত হলাম। আজ যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে কতইনা খুশি হতেন । পিতার আশীর্বাদ নিয়ে এগিয়ে যাও তুমি সফল হবেই। তোমার পিতার আত্মার শান্তি কামনায়।
আনন্দ রায়
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন