এই ব্লগটি সন্ধান করুন

মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০২২

ডেব্রিসের নিঃশব্দের কান্না

                                                 মূলঃ The Roadside, By Sadat Hasan Manto. 

[নোটঃ উর্দু ভাষার খ্যাতিমান গল্পকার Sadat Hasan Manto এর নামে ব্রিটিশ সরকার অশ্লীলতার অভিযোগ আনলে; তিনি বলেন –‘লেখায় অশ্লীলতা থাকলে বুঝতে হবে, আমরা সেই সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি (“If you find my stories dirty,the society you are living in is dirty. With my stories, I only expose the truth)।” ব্রিটিশ সরকার তাকে শাস্তি দিতে না পারলেও, দেশান্তরিত মান্টোকে পাকিস্তান সরকার ঠিকই এ অপরাধে তাকে সাজা দেন । পাকিস্তানে বসে মান্টো লিখেন – আমার মৃত্যুর পর আমাকে পুরস্কৃত করা হবে, আর সেদিন আমি বিজয়ী; হেসে বলব –কে বড় ছোট গল্পকার —আমি না ঈশ্বর ? হয়েছিলও তাই!]

এটি বছরের সেই সময়। যেদিন আকাশ ছিল  নীল– পরিষ্কার এবং ঝকঝকেঠিক আজকের মত। একই মৃদু সূর্যালোক। পৃথিবী মিষ্টি স্বপ্নের গন্ধ খুঁজে পেয়েছিল;  ঠিক যেমনটি সে খুঁজে পায় আজো। এরকম একটি দিনে তার পাশে শুয়েআলাদীন রিসোর্টের  ৫০১ নম্বর কক্ষে আমি তাকে আমার স্ফীত হৃদয় দিয়েছিলাম,এটার সাথে -ওটার মিলন ঘটিয়েছিলাম, এমনকি আমার তপ্ত পেলভিস হাড়, তাকে দিয়ে ঠাণ্ডা করিয়েছিলাম; আমার ৩৪ -৩২  -৩৪ মাপের শরীরে কোথাও তার হাত রাখতে বাঁধাও দেইনি। 

 

সে আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার জীবন শূন্য, অতৃপ্ততুমি আমাকে উপহার দেয়া  এই মুহূর্তগুলো দিয়ে পূর্ণ করেছো। আমি চিরকাল তোমার  কাছে কৃতজ্ঞ থাকবকারণ তুমি  ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ থাকতাম ... আমি জানি না তোমাকে আর কী বলব ... আমি সন্তুষ্ট বোধ করছি ... সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট। আমার মনে হয় তোমাকে আমার  লাগবে প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে।’  ৫০১ নম্বর কক্ষে আমি  চোখের জল ফেলেছিলাম, সে আমার  বিসর্জিত অশ্রু  মুছে দিয়েছিল ৩৪ মাপের অন্তর্বাসটি দিয়ে, যেটি  সে কিনে এনেছিল কলকাতা থেকে। আর আজ সে চলে গেছে ,আমার কাছ থেকে দূরে, হয়তো কখনো ফিরে আসার জন্য নয়?

আমার চোখে অশ্রু। আমার হৃদয় কেঁদেছিল।আমার পেলভিস হাড় ব্যাথায় কেঁপে উঠেছিল। আমি মিনতি করার চেষ্টা করেছি। আমি তাকে লক্ষ,লক্ষ বার জিজ্ঞাসা করার চেষ্টা করেছি, কেন তার আমার আর প্রয়োজন ছিল, আমরা যখন  দুইজনেই বিবাহিত; কেন সঙ্গোপনে আলাপন? তার জন্য আমার প্রয়োজনীয়তা কিসেতার সমস্ত, আর প্রচণ্ড রকমের ভয়ংকর তাগিদআমি এড়াতে পারিনি। বিশেষ করে সবিশেষ মুহুর্তগুলির পরে, যা তার সত্তার শূন্য স্থানগুলিকে পূর্ণ করেছিল। আমারও তাই । 

সে বলেছিল, 'এই মুহুর্তে, প্রতিটি পদক্ষেপে তুমি আমাকে পূর্ণ এবং শক্তিশালী করেছোতোমার প্রতিটি কণাপ্রতিটি পরমাণু দিয়ে আমার অতৃপ্ত সত্তাকে শক্তিশালী করেছো। কিন্তু এখন যেটা হয়ে গেছেতোমার সাথে আমার সম্পর্কটা আপনা-আপনিই ফিট হয়ে গেছে। 

কত নিষ্ঠুর তার কথাগুলো! পাথরের মতো আমার দিকে ছুঁড়ে দেওয়া এই কথাগুলোর কষ্ট আমি নিতে পারিনি। আমি কাঁদতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু আমার কান্নার কোন প্রভাব তার উপর পড়েনি। আমি বলেছিলাম, 'এই কণা এবং পরমাণুগুলির কথা তুমি বলছিলা - তারা একসময়  আমার অংশ ছিল। আমি যদি আমার নিজের কিছু অংশ তোমাকে দিয়ে থাকিআমি কি আজ সেই স্মৃতিগুলো মিস করছি নাতোমাকে পূর্ণ করতে গিয়ে আমি কি নিজেকে শূন্য করিনিআমি কি তোমাকে আমার সব উজাড় করে দেইনিআমার ঈশ্বরআমাকে মূর্তি বানিয়ে আমার উন্মুক্ত বক্ষে তোমাকে জড়িয়ে রাখিনি?'

 

সে বলেছিল, ‘মৌমাছি মধু উৎপাদনের জন্য কুঁড়ি ও ফুল চুষে খায়কিন্তু যে ফুলের জল -রস শুকিয়ে গেছে, সেই  ভ্রমরের ঠোঁটে মধু কখনও স্পর্শ করতে পারেনা। ঈশ্বর অন্যকে তাঁর উপাসনা করতে দেন; কিন্তু তিনি কখনই অন্যকে গ্রহণ করেন না

তাঁর প্রভু হিসাবে। সে -----  সাথে একাকী কিছু মুহূর্ত কাটিয়ে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করে লাপাত্তাকিন্তু সেই ঈশ্বর আজ কোথায়? সেই প্রভুর মতো তুমিও উত্তপ্ত বিছানায় আমার অনুরণন তৈরি করে আজ কেন দূরে থাকো?  

 

একজন নারী  কাঁদতে পারে কিন্তু তর্ক করতে পারে না। নারীর  সবচেয়ে বড় যুক্তি তার চোখ থেকে যে অশ্রু প্রবাহিত হয়। আমি তাকে বলেছিলাম, 'আমার দিকে তাকাওআমি কাঁদছি। আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। যাওযদি করতেই হয়তবে আমার কিছু চোখের জল নিয়ে যাওতোমার স্মৃতির চাদরে মোড়ানো থাক। আমি এখন সারা জীবন কাঁদবতবে আমি এটা জেনে সান্ত্বনা পাব যে তুমি আমার অন্তত কিছু চোখের জল মুছে দিয়েছ  আর কিছু না হলেওঅন্তত আমাকে খুশি করার জন্য।

 

সে আমাকে কথায় কথায় বলেছিল, ‘আমি তোমাকে যথেষ্ট সুখ দিয়েছি। সমস্ত শরীর -----আমার কাছ থেকে তুমি যে আনন্দ পেয়েছো;তার স্মরণ কেন, সারাজীবন তোমাকে সমর্থন করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে নাতুমি আমাকে শক্তিশালী করতে  গিয়ে তোমাকে নিজেকে  অসম্পূর্ণ করে দিয়েছ। কিন্তু এই অসম্পূর্ণতা যে আমার  জীবনের বাকিটুকু টিকিয়ে রাখার জন্য যথেষ্টআমি একজন মানুষ – তোমার ছোঁয়ায় আমি সম্পূর্ণ হয়ে উঠিআগামীকাল স্বামী প্রবরটি করবে। কিন্তু আমি তোমাতেই সম্পূর্ণ হই।  আগামীকাল অন্য কেউ এটা করবে; গতকাল কেউ করেছে, তবুও আমি সম্পূর্ণ হইনি। আমি সেভাবেই তৈরি। আমি প্রায়ই নিজেকে সম্পূর্ণ এবং অসম্পূর্ণ অনুভব করতে চাই। আমার সত্তার শূন্যস্থান, পূরণ করতে, পেলভিস হাড় ভাঙতে এবং আমাকে বারবার সুস্থ ও শক্তিশালী একটি বোধ অনুভব করতে ইচ্ছুক তোমার সান্নিধ্য আমাকে মোহিত করে, না আর কারো নয়, বহুজন আমার শরীর ছুঁয়েছে, কিন্তু ছোঁয়ায় আমার শরীর নেচে উঠেনি বা শরীর নাচাতে পারেনি। তুমি কেন বুঝেও বুঝো না।

 

আমি কাঁদতে থাকি এবং হতাশ বোধ করি। এভারডিনের রাস্তায় ঘুরি। শরীর চায় কিছু, বুঝি , আমার ফ্ল্যাটমেট বুঝেসেও কয়েকবার সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করেছে;তার নিরন্তর প্রচেষ্টার মাঝেঅবশেষে এক শীতের রাতে কাতর আমি তোমার শোকে। না, আমি কোন বাঁধা দেইনি; কিন্তু সেই ফ্ল্যাটমেট আমার শরীরকে নাচাতে পারেনি।  

 

আমি ভেবেছিলাম, ‘এই কয়েকটা মুহূর্ত যেগুলো আমার হাতের মুঠোয় ছিল... নানাআমি তার  হাতের মুঠোয় ছিলাম... কেন?আমি তার কাছে নিজেকে এতটা বিসর্জন দিলামকেন,আমি আমার হৃদয়কে সেই খাঁচায় পুরে দিলাম; আমি কি তবে পিছনের মুখ খোলা রেখেছিলামহ্যাঁএর মধ্যে একটি আনন্দ ছিলএকটি নির্দিষ্ট আনন্দ ছিলনিজেকে ছেড়ে দেওয়ার মধ্যে। কিন্তু এটা কি ধরনের সংগ্রাম নাকি খচ্চরামিসে রয়ে -সয়ে নেতিয়ে গেল অল্পত্বেই, আমি চেয়েছিলাম তোমার মতো সবল আর মজবুতকিন্তু কোথায় তার আমার আর প্রয়োজন নেইসাথে থাকা ফ্ল্যাটমেটটি তার ক্ষণিক চাহিদা আগেই মিটিয়ে নিলো কয়েক মুহূর্তেই, তোমাকে,আমার দরকার ঢের বেশি, যা আমি তোমার কাছ থেকে পাই, অনেক বেশি। তুমি যতই শক্তিশালী হয়ে উঠেছো এবং আমি ততই দুর্বল হয়েছি। যেন আকাশে দুটি মেঘের বজ্রমেলায় পরিণত বৃষ্টির ফোঁটা নিয়ে খেলা; যা আমি তোমার সাথে খেলতে চাই, এবং অব্যাহত বজ্রপাত ঘটুক আমার গিরিখাতে; অতঃপর শুনশান নীরবতা। অথচ তোমার বেলায় --- । হে ঈশ্বর! এটা  কেমন  বিচারআকাশেরপৃথিবীরবা তাঁর যিনি তৈরি করেছেন এই রহস্যময় জগৎ?

 

 

দুই

আমি কাঁদতে থাকি এবং হতাশ বোধ করি, অসাড় শরীরে ঘুরি সাভারের রাস্তায় রাস্তায় -- 

'দুটি আত্মা একত্রিত হয়ে যায় এবং সেই মিলন থেকে মহাবিশ্বকে ঘিরে থাকে। এই সব কি নিছক কাব্যিক হাত তালি ছিলযদিও এটা সত্য যে দুটি আত্মা একত্রিত হয়ে, তোমার হাতুড়ির খোঁচা আমার পেলভিস হাড়ে আমি টের পাই এবং একটি একক বিন্দুতে মিলিত হয়;সৃষ্টি করে - একটি আত্মা এই ধরনের সৃষ্টি আমরা চাইনিআমিও না, তুমিও না? তবুও কেন তোমার দিক হতে আর এখন সাড়া পাই না। সেই অন্তর্বাসের কথা, আলাদীনের কথা, ৫০১ এর কথা, সবিই  কি তোমার ক্ষণিক তেষ্টা মিটানো ---।  

আজ বছরের এই সেই সময়; সেই দিন। আকাশ তার মতো করেই নীল বর্ণ ধারণ করেছে – পরিষ্কার এবং ঝকঝকে – সেই দিনের মতো। একই মৃদু সূর্যালোক। পৃথিবী যেন একটি মিষ্টি স্বপ্নের গন্ধ পেয়েছিলঠিক যেমনটি এখন, কিংবা আজ। আমি তোমার পাশে শুয়েআমার উষ্ণ হৃদয় তোমাকে দিয়েছিলাম--- তুমি খেলছিলে--- আমার ৩৪ সাইজ নিয়ে।তোমার দেয়া বিদেশী অন্তর্বাসটি তুমি নিজেই খুলেছিলে সেই ৫০১ এ । কিন্তু আজ তুমি আমার পাশে নেই। এটাই আজ পার্থক্য। আমার গিরিখাতটি  দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে? তুমিই কি আমার অপূর্ণতার কারণ












কোন মন্তব্য নেই: